শনিবার, ১১ জুলাই, ২০১৫

স্কুল কলেজের জন্য ওয়েবসাইট তৈরী কেরেছেন বা করতেছেন? স্কুল কলেজের জন্য ওয়েবসাইট তৈরী কেরেছেন বা করতেছেন?

স্কুল কলেজের জন্য ওয়েবসাইট তৈরী কেরেছেন বা করতেছেন? মিলিয়ে নিন আপনার ডেভলপার সরকারী বিধিমোতাবেক এই পয়েন্টগুলো পূরন করছে কি না । 
সরকারীবিধি মোতাবেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য ওয়েবসাইট তৈরীর নিয়মগুলো না মেনে ওয়েবসাইট করলে আপনাকে আবারো এই ওয়েবসাইট করতে হতে পারে।
এক্ষেত্রে আপনাকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সকল তথ্য ও কার্যক্রম নিম্নবর্নিত ফিচার সম্বলিত ডায়নামিক ওয়েবসাইট তৈরী ও .edu.bd ডোমেইন নিবন্ধন পুর্বক হোস্টিং কোম্পানীতে হোস্ট করতে হবে।
সরকারীবিধি মোতাবেক ফিচার সমুহঃ
১) ছাত্রীদের তথ্য শুধুমাত্র শিক্ষক ও সংশ্লিষ্ট অভিভাবকগণ পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে দেখতে পারবেন।
২) প্রতিদিন ক্লাস শুরুর এক ঘণ্টার মধ্যে শ্রেণি অনুসারে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ও অনুপস্থিতির সংখ্যা ও শিক্ষকদের উপস্থিতি ও অনুপস্থিতির সংখ্যা ওয়েবসাইটে আপডেট করতে হবে ।
৩) প্রতিষ্ঠানের পরিচিতি ও ইতিহাস, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কনটেন্ট, ভূমির তফসিল, ভূমির মালিকানা তথ্য, ভবন, কক্ষ সংখ্যা, শিক্ষার্থীর জন্য আসন, যানবাহন ও অন্যান্য সুবিধা, মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম ও কম্পিউটার ল্যাব, কম্পিউটার ব্যবহার, পরিচ্ছন্নতা, শরীরচর্চা স্যানিটেশন, পঠিত বিষয়, বিগত ৩ বছরের পাবলিক পরীক্ষার ফল, ম্যানেজিং কমিটির তখ্য ইত্যাদি থাকবে।
৪) ওয়েবসাইটে ক্লাস রুটিন, একাডেমিক ক্যালেন্ডার, বাৎসরিক ছুটির তালিকা, অভ্যান্তরীন পরীক্ষার ফল, জরুরী নোটিশ, টি.সি,প্রসংসাপত্র, শিক্ষার্থী সম্পর্কিত সকল প্রকার রিপোর্ট, প্রতিষ্ঠানের একাউন্টস তথা প্রাত্যহিক কালেকশন, খরচ, স্টেটমেন্টসহ সকল প্রকার হিসাব ব্যবস্থাপনা, English for today এর Listening text, Electronic Instruction Manual, e-book ইত্যাদি থাকবে। এছাড়া নতুন নতুন সেবা অন্তরভুক্ত করার প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
৫) ওয়েবসাইট হালনাগাদ ও সার্বিক ব্যবস্থাপনার জন্য কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন লোকবল না থাকলে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে কাজ চালাতে হবে। প্রতিষ্ঠানের একজন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিতে হবে।
স্কুল ওয়েবসাইট করার জন্য আমাদের সেবাঃ
* আমরা হোমপেজ স্লাইডার ও স্ক্রিলিং নিউজটিকার সহ সম্পুর্ন ডায়নামিক ফুল ফিচার্ড সাইট করে দেব। যাতে করে পরবর্তিতে ওয়েবসাইট ব্যাবস্থাপনার দায়িত্বে যিনি থাকবেন তিনি সাইটের ব্যাকেন্ড কন্ট্রোলপ্যানেল থেকে যেকোন প্রকার পরিবর্তন, পরিবর্ধন, পরিমার্জন ও হালনাগাদ করতে পারেন।
* বর্তমান প্রযুক্তির উৎকষর্ততা এবং মোবাইল ও স্মার্টডিভাইসের ব্যবহারের আধিক্যের কথা মাথায় রেখে আপনার ওয়েবসাইট কে সম্পুর্ন রেসপন্সিভ ও যেকোন মাপের (স্ক্রিন রেজুলেশন) ডিভাইসের উপযোগী করে বানানো হবে।
* শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের যেকোন প্রকার এসএমএস নোটিফিকেশন প্রদানের জন্য আপনাকে একটি ফ্রী বাল্ক এমএমএস একাউন্ট প্রদান করা হবে। এখান থেকে আপনি এসএমএস ক্রেডিট ক্রয় সাপেক্ষে আপনার প্রতিষ্ঠানের নামে (এখানে মোবাইল নাম্বারের বদলে আপনার প্রতিষ্ঠানের নাম দেখা যাবে) শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদেরকে ছুটির নোটিশ, বেতন, অভিভাবক সম্মেলনসহ যে কোন প্রকার নোটিফিকেশন সেন্ড করতে পারবেন।
* প্রতিষ্ঠানের সকল তথ্য যেমন প্রতিষ্ঠান পরিচিতি, প্রধান শিক্ষকের বানী, শিক্ষক ও কর্মচারীদের তথ্য, পাবলিক পরিক্ষার ফলাফল ও তথ্য, ছুটির ক্যালেন্ডার, শ্রেনী রুটিন ইত্যাদির জন্য মেনুবারে ড্রপডাউন মেনু সহ আলাদা আলাদা পেজ করে দেয়া হবে।
*সাইডবারে গুরুত্বপুর্ন ওয়েবসাইটের লিঙ্ক অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
* ওয়েবসাইটে অনলাইন ভিজিটর ও মোট ভিজিটর দেখার জন্য সাইডবারে নিচের দিলে ভিজিটর কাউন্টার এড করা হবে।
* ওয়েবসাইটে মোট দুইটি সাইডবার ও মাঝে একটি কলাম সহ তিন কলামে করা হবে এবং সাইডবারে বিভিন্ন তথ্য দিয়ে সাজানো থাকবে (প্রয়োজন ও চাহিদার ভিত্তিতে সাইটের লেয়াউট পরিবর্তনযোগ্য)।
* ওয়েবসাইটের বিভিন্নপেজে ক্লাশ রুটিন, নোটিশ সহ প্রয়োজনীয় ফর্ম সমুহ পিডিএফ আকারে ডাউনলোডের ব্যাবস্থা করা হবে (ওয়েবসাইটের ম্যানেজমেন্ট দায়িত্বে যিনি থাকবেন তিনি নিয়মিত এটি প্রয়োজনমত আপডেট করবেন)।
*ভর্তির আবেদনের জন্য অনলাইন বেইজ ভর্তি ফর্মের ব্যাবস্থা রাখা হবে। এখানে বিভিন্ন তথ্য পুরন করে শিক্ষার্থীরা প্রিন্ট করে জমা দিতে পারবেন।
* শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের ডাটাবেসের জন্য স্কুল ম্যানেজমেন্ট অনলাইন সফটওয়্যার দেয়া হবে । এটার মাধ্যমে যেকোন শিক্ষার্থী তাদের একাউন্টে লগইন করে তাদের সকল ধরনের হালনাগাদ দেখতে ও রিপোর্ট ডাউনলোড করতে পারবে।


.edu.bd ডোমেইন পেতে যেসব তথ্য জমা দিতে হবে তার নমুনাঃ
* প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধনের স্কান কপি।
* প্রতিষ্ঠানের (কলেজ/স্কুল) প্যাডে আবেদন পত্র। (নমুনা আমরা দিবো)
* প্রধান শিক্ষকের ন্যাশনাল আইডির স্কান কপি।
* বিটিসিএল এর ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোডকৃত ডট বিডি ডোমেইনের আবেদন ফর্ম প্রতিষ্ঠানের সীল ও প্রধান শিক্ষকের স্বাক্ষরসহ।
*বিটিসিএল এর ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোডকৃত ডট বিডি ডোমেইনের এগ্রিমেন্ট ফর্ম প্রতিষ্ঠানের সীল ও প্রধান শিক্ষকের স্বাক্ষরসহ।

বৃহস্পতিবার, ২ জুলাই, ২০১৫

তৃতীয় প্রজন্মের ইস্পাত

তৃতীয় প্রজন্মের ইস্পাত উদ্ভাবনে কাজ করছেন মার্কিন গবেষকেরা।
জ্বালানি সাশ্রয়ী গাড়ি তৈরির কাজে লাগাতে তৃতীয় প্রজন্মের ইস্পাত উন্নয়নে কাজ করছেন মার্কিন গবেষকেরা। মজবুত কিন্তু হালকা এই ইস্পাত ভবিষ্যতে গাড়ির জ্বালানি সক্ষমতা আরও বাড়াবে বলেই দাবি করেছেন গবেষকেরা। খবর আইএএনএসের।
নতুন এই ইস্পাতকে গবেষকেরা বলছেন, ‘থার্ড জেনারেশন অ্যাডভান্সড হাই-স্ট্রেংথ স্টিল’ বা ‘জেন থ্রি’। যুক্তরাষ্ট্রের মিসৌরি ইউনিভার্সিটির সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগের কেন্ট ডি পিসলি স্টিল ম্যানুফ্যাকচারিং গবেষণা কেন্দ্রে এই ইস্পাত তৈরির কাজ চলছে।
গবেষণা কেন্দ্রটির পরিচালক রোনাল্ড ও’মেইলি এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আমরা এখন জেন থ্রির মেকানিক্যাল প্রোপার্টি অর্জনে স্টিলের নকশা পরিশোধনের কাজ করছি।’
এটি প্রতিশ্রুতিশীল তৃতীয় প্রজন্মের ইস্পাত হবে। নির্গমন পদ্ধতির উন্নতি, স্থানান্তর দক্ষতা বৃদ্ধি ও অ্যারোডাইনামিকসের উন্নয়নের ফলে গাড়ির জ্বালানি খরচ কমে যাবে। এ ছাড়া গাড়ি ওজন কমানোটাও গুরুত্বপূর্ণ।
ও’মেইলি বলেন, গাড়ি নির্মাতারা গাড়িকে নিরাপদ রেখে এর ওজন কমানোর বিষয়টি নিয়ে ভাববেন। এখনকার গাড়ি ও ট্রাকে প্রথম প্রজন্মের স্টিল বা ইস্পাতের ব্যবহার দেখা যায়। দ্বিতীয় প্রজন্মের ইস্পাত প্রথম প্রজন্মের চেয়ে কিছুটা উন্নত, মজবুত ও হালকা ওজনের হয়েছে। কিন্তু এটি উৎপাদন করার খরচ বেশি এবং জটিল।
ও’মেইলি আরও বলেন, তৃতীয় প্রজন্মের ইস্পাতকে হতে হবে আরও হালকা ও গাড়িতে ব্যবহারের মতো মজবুত। গাড়ি নির্মাতারা যাতে এই স্টিলকে অধিক নিরাপদ মনে করতে পারেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ইস্পাত নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের একটি প্রতিনিধিদল এই প্রকল্পটি পর্যবেক্ষণ করছেন।

যেভাবে খুন হলেন রাসপুটিন

ইতিহাসের রহস্যপুরুষ রাসপুটিন ছিলেন গেঁয়ো এক চাষি তিনি দাবি করতেন, তার কাছে রোগ সারানোর ক্ষমতা রয়েছে এবং তিনি ভবিষ্যদ্বাণীও করতে পারেন তিনি রুশ সম্রাট দ্বিতীয় নিকোলাসের পতনে সম্রাজ্ঞী আলেক্সান্দ্রার মনোযোগ আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছিলেন বলা হয়, সম্রাজ্ঞী বা জারিনা আলেক্সান্দ্রার ওপর তার ব্যাপক প্রভাব ছিল জারিনা তার কানকথা শুনতেন এমনকি তার সাথে জারিনার সম্পর্কটাও ছিল রহস্যজনক একজন সাধারণ চাষির এতটা উঁচু অবস্থানে থাকাটা সহ্য করতে পারেননি সম্রাটের অভিজাত সভাসদেরা তারা রাসপুটিনকে বিবেচনা করতেন একটিডার্ক ফোর্সহিসেবে, যা ধ্বংস করে চলেছে মাদার রাশিয়াকে রুশ সাম্রাজ্যকে বাঁচানোর জন্য অভিজাত সভাসদের কয়েকজন সিদ্ধান্ত নেন এই রাসপুটিনকে হত্যা করা হবে ১৯১৬ সালের ১৬-১৭ ডিসেম্বরের রাতে তারা রাসপুটিনকে হত্যা করেন পরিকল্পনা ছিল একদম সরল তারপরও এই দুর্ভাগ্যরজনীতে ষড়যন্ত্রকারীরা দেখলেন তাকে হত্যা করা বেশ কঠিন কাজ ছিল
উন্মাদ সন্ন্যাসী
রাশিয়ার সম্রাট বা জার দ্বিতীয় নিকোলাস সম্রাজ্ঞী বা জারিনা আলেক্সান্দ্রা বহু বছর ধরে নানা চেষ্টাসাধ্যি করেও তাদের কোনো উত্তরাধিকারী তথা পুত্রসন্তানের জন্ম দিতে ব্যর্থ হন পরপর চার কন্যাসন্তান জন্ম দেয়ার পর তারা পুত্রসন্তানের জন্য উদগ্রীব হয়ে ওঠেন জন্য তারা অনেক আধ্যাত্মিক পুরুষ সন্ন্যাসীর শরণ নেন শেষ পর্যন্ত জারিনা আলেক্সান্দ্রা ১৯০৪ সালে এক পুত্রসন্তানের জন্ম দেন তার নাম রাখা হয় আলেক্সি নিকোলায়েভিচ জার জারিনা যেন তাদের উত্তরাধিকারের ভাবনা থেকে মুক্ত হলেন কিন্তু দুর্ভাগ্য, তাদের বহু আকাক্সিক্ষত এই সন্তান আক্রান্ত হলো রাজরোগ হেমোপিলিয়ায় যখনই আলেক্সির রক্তক্ষরণ শুরু হতো, তা আর বন্ধ হতো না সম্রাট সাম্রাজ্ঞী উভয়ই পাগলপারা তাদের সন্তানের আরোগ্যের ব্যাপারে আবার ছুটোছুটি হাকিম-কবিরাজ, ফকির-দরবেশ, যাজক-ভিক্ষু আর সন্ন্যাসীর দরবারে ১৯০৮ সালের আগে কিছুতেই কিছু হলো না সময়ে তার রক্তক্ষরণের এক পর্বে জারনন্দনের জন্য ডাকা হলো গেঁয়ো চাষি গ্রেগরি এফিমোভিচ রাশপুটিনকে শেষ পর্যন্ত রাশপুটিন জারপুত্র আলেক্সিকে সারিয়ে তুলতে সক্ষম হন সেই সূত্রে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হয়ে ওঠেন সম্রাট পরিবারে জড়িয়ে পড়েন সম্রাট পরিবারের নানা ঘটনা-অঘটনার সাথে

রাসপুটিনের জন্ম সম্ভবত ১৮৬৯ সালের ১০ জানুয়ারি, সাইবেরিয়ার শহর পকরভস্কয়িতে ১৮ বছর বয়সে রাসপুটিনের মধ্যে ধর্মীয় পরিবর্তন আসে তখন তিনি তিন মাস কাটান ভার্কোটারি মনাস্ট্রিতে এরপর তিনি যখন নিজ শহরে ফিরে আসেন, তখন তিনি এক পরিবর্তিত মানুষ তিনি বিয়ে করেছিলেন প্রসকোভিয়া ফিয়োদরোভনাকে তাদের তিন সন্তান ছিল কিন্তু তাদের ফেলে এখানে-ওখানে বাউলের মতো ঘুরে বেড়াতে লাগলেন সময় তিনি গ্রিস জেরুসালেম সফর করেন তিনি মাঝে মধ্যে নিজ শহর পকরভস্কয়িতে ফিরে আসতেন ১৯০৩ সালে তিনি চলে যান পেত্রোগ্রাদে তথা সেন্ট পিটার্সবার্গে তখন তিনি নিজেকে ঘোষণা করেন এমন এক পবিত্র আধ্যাত্মিক গুরুজন হিসেবে, যার রয়েছে রোগমুক্তির ভবিষ্যদ্বাণী করার ক্ষমতা
১৯০৮ সালে রাসপুটিনকে ডেকে নেয়া হয় সম্রাটের প্রাসাদে তখন তিনি এর প্রমাণ করতে সক্ষম হন যে, তার রোগ সারানোর ক্ষমতা রয়েছে তিনি আলেক্সিকে সারিয়ে তোলেন কিভাবে তিনি তা করলেন? বিষয়টি এখনো বেশ বিতর্কিত কেউ বলেন রাসপুটিন ক্ষেত্রে ব্যবহার করেন হিপনোটিজম অন্যরা বলেন রাসপুটিন হিপনোটিজম পদ্ধতি সম্পর্কে কিছুই জানতেন না তার অতিন্দ্রীয় হাবভাবের কারণে তার রোগমুক্তির ভবিষ্যদ্বাণী করার দাবি সত্যি কি না, তা প্রশ্নবোধকই থেকে যায় সে যা- হোক, সম্রাটপুত্রকে সুস্থ করে তুলে তিনি জারিনা আলেক্সান্দ্রার আস্থাভাজন হতে সক্ষম হন সেই সূত্রে তিনি তার ব্যক্তিগত উপদেষ্টাও হন একই সূত্রে তিনি জার নিকোলাসের ওপরও প্রভাব বিস্তার করেন একজন সামান্য চাষির এই উপদেষ্টা হওয়া এবং জার জারিনার ওপর তার প্রভাব মেনে নিতে পারেননি সম্রাটের অভিজাত সভাসদেরা তা ছাড়া রাসপুটিন ছিলেন প্রবল মাদক যৌনপিয়াসী উভয় ক্ষেত্রেই তিনি ছিলেন মাত্রাজ্ঞানহীন রাসপুটিন সম্রাট সম্রাজ্ঞীর কাছে ছিলেন একজন ধার্মিক পবিত্র মানুষ তবুও অন্যদের কাছে তিনি ছিলেন নোংরা, তিনি সমাজের মহিলাদের রাজনৈতিক আনুকূল্যের বদলে যৌন সম্ভোগ করতেন সব রাশিয়ান বিশ্বাস করে না যে, রাসপুটিন জারিনা প্রেমিক-প্রেমিকা ছিলেন এবং তারা জার্মানদের সাথে আলাদা শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন উল্লেখ্য, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় রাশিয়া জার্মানি ছিল পরস্পরের শত্রু সবাই চাইছিলেন রাসপুটিন থেকে মুক্তি সম্রাট সম্রাজ্ঞী যুগলকে আরো প্রভাবিত করার জন্য তারা চাইছিলেন রাসপুটিনকে নিয়ে যেসব কানাঘুষা চলছে এর অবসান হোক কিন্তু সম্রাট সম্রাজ্ঞী তা চাননি
খুনিরা
প্রিন্স ফেলিক্স ইউসুপভ মনে হয় রাসপুটিনের খুনি ছিলেন না তিনি শুধু বিরাট পারিবারিক সৌভাগ্যের উত্তরাধিকার ছিলেন না, তিনি জারের ভাইয়ের মেয়ে ইরিনার স্বামীও ছিলেন ইরিনা ছিলেন খুবই সুন্দরী বয়সে তরুণী ফেলিক্সও দেখতে শুনতে বেশ ভালো ছিলেন তার চেহারা অর্থবিত্ত ব্যবহার করে কিছুটা বিপথগামী হয়েও থাকতে পারেন মনে করা হয় ফেলিক্স রাসপুটিনকে হয়তো ফাঁদে আটকাতেও পারেন

গ্র্যান্ড ডিউক দিমিত্রি প্যাভলোভিচ ছিলেন আরেক খুনি তিনি জার দ্বিতীয় নিকোলাসের চাচাতো ভাই প্যাভিওভিচের বাবা পাভেল আলেক্সান্দ্রাভিচ, তার বাবা জার দ্বিতীয় আলেক্সান্ডার দিমিত্রির সাথে জারের বড় মেয়ে ওলগা নিকোলায়েভনার একবার অ্যাঙ্গেজমেন্ট হয়েছিল কিন্তু তার অব্যাহত সমকামিতার কারণে সম্রাট পরিবার এই অ্যাঙ্গেজমেন্ট বাতিল করে দেন

রাসপুটিনকে খুন করার অপর ষড়যন্ত্রকারী হচ্ছেন ভ্লাদিমির পুরিশকেভিচ তিনি ছিলেন রাশিয়ান পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ডুমার একজন স্পষ্টবাদী সদস্য ১৯১৬ সালের ১৯ নভেম্বর পুরিশকেভিচ ডুমায় এক ক্ষুব্ধ বক্তব্য রাখেন সেখানে তিনি বলেন, জারের মন্ত্রীরা রূপান্তরিত হয়েছেন পুতুল নাচের পুতুলে আর এই পুতুলগুলোর সুতা রয়েছে রাসপুটিন সম্রাজ্ঞী আলেক্সান্দ্রা ফিয়োদরোভনার (যিনি রাশিয়া জারের ইভিল জিনিয়াস, রাশিয়ান সিংহাসনে বসে যিনি থেকে গেছেন জার্মানই এবং দেশ জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন) সুদৃঢ় হাতে ফেলিক্স ইউসুপভ পার্লামেন্টে বসে তার এই বক্তব্য শোনেন এবং পরে তার সাথে যোগাযোগ করেন পুরিশকেভিচ দ্রুত রাজি হন রাসপুটিনকে খুন করার উদ্যোগের সাথে শরিক হতে

ষড়যন্ত্রকারীদের সাথে ছিলেন লে. সুখতিন তিনি ছিলেন রোগমুক্তির পর সুস্থ হয়ে ওঠা একজন তরুণ সামরিক কর্মকর্তা তিনি কাজ করতেন প্রেওব্রেজনস্কি রেজিমেন্টে

তাদের সহযোগী ছিলেন . ল্যাজাভার্ট তিনি ছিলেন পুরিশকেভিচের চিকিৎসকের বন্ধু . ল্যাজাভার্টকে পঞ্চম ব্যক্তি হিসেবে যোগ করার কারণ তৃতীয় কোনো ব্যক্তির প্রয়োজন ছিল তাদের গাড়ি চালানোর জন্য
পরিকল্পনা
পরিকল্পনাটি ছিল তুলানামূলকভাবে সরল ফেলিক্স ইউসুপভ রাসপুটিনের সাথে বন্ধুত্ব গড়ে তুলে তাকে হত্যার জন্য প্রলুব্ধ করে নিয়ে আসবে ইউসুপভের প্রাসাদে
কখন খুনের কাজ সম্পন্ন হবে? গ্র্যান্ড ডিউক দিমিত্রি প্যাভলোভিচ ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রতি রাতেই ব্যস্ত থাকবেন আর øাদিমির পুরিশকেভিচ ১৭ ডিসেম্বর চলে যাবেন সীমান্তের একটি ট্রেন-হাসপাতালে যোগ দিতে তাই ঠিক করা হয় রাসপুটিনকে খুন করা হবে ১৬-১৭ ডিসেম্বর রাতে ষড়যন্ত্রকারীরা ঠিক করেন রাতের মধ্যে তার লাশ লুকিয়ে ফেলতে হবে ফেলিক্স লক্ষ করেছেন রাসপুটিনের অ্যাপার্টমেন্টে মধ্যরাতের পর পাহারা থাকে না সিদ্ধান্ত নেয়া হয় ফেলিক্স রাত সাড়ে ১২টায় পিকআপ করে তার অ্যাপার্টমেন্টে রাসপুটিনকে নিয়ে আসবেন

কিভাবে তারা রাসপুটিনকে প্রলুব্ধ করে ইউসুপভের প্রাসাদে নিয়ে আসবে? তারা জানেন, রাসপুটিন যৌনতা পছন্দ করেন ক্ষেত্রে ফেলিক্স তার সুন্দরী স্ত্রী ইরিনাকে টোপ হিসেবে ব্যবহার করবেন ফেলিক্স রাসপুটিনকে কৌশলে বলবেন, সে ইরিনার সাথে যৌন সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য তার প্রাসাদে যেতে পারেন ফেলিক্সের স্ত্রী তখন তাদের ক্রিমিয়ার বাড়িতে ছিলেন ফেলিক্স তার স্ত্রীকে চিঠি লিখে বলেন তিনি যেন গুরুত্বপূর্ণ ঘটনায় জড়িত হন কয়েকটি চিঠির পর তিনি ডিসেম্বরের শুরুতে ফিরতি চিঠি দিয়ে বলেন, তিনি তা করতে পারবেন না ষড়যন্ত্রকারীদের তখন উপায় বের করতে হয় ইরিনাকে সেখানে উপস্থিত না রেখেই তার মিথ্যা উপস্থিতির কথা বলে তাকে রাসপুটিনের টোপ হিসেবে ব্যবহার করতে

প্রাসাদের কোন স্থানে তাকে খুন করা হবে? ফেলিক্স রাসপুটিন প্রাসাদের পাশের একটি প্রবেশপথ দিয়ে প্রাসাদে ঢুকবেন এবং সিঁড়ি বেয়ে চলে যাবেন বেইজমেন্টে অর্থাৎ প্রাসাদের একদম নিচতলায় ফলে কেউ তাদের প্রাসাদে ঢুকতে কিংবা বেরিয়ে যেতে দেখতে পাবে না ফেলিক্স এই নিচতলাটিকে ঘষেমেঝে ঝকঝকে করে রেখেছিলেন একটি খাবারঘর হিসেবে

খুনের কাজে এরা কী কী অস্ত্র ব্যবহার করা হবে? ইউসুপভের প্রাসাদটি ছিল মইকা খালের পাড়ে আর খালের ওপারেই ছিল পুলিশ ফাঁড়ি অতএব ভয় ছিল, বন্দুক ব্যবহার করলে পুলিশ শব্দ শুনে ফেলতে পারে তখন তারা সিন্ধান্ত নেয় বিষ প্রয়োগের কিভাবে রাসপুটিনকে হত্যা করা হবে? ডাইনিং হলটি এমনভাবে সাজানো থাকবে যেন এই মাত্র কয়েকজন অতিথি খাবার খেয়ে চলে গেছেন ওপর থেকে এমন আওয়াজ আসতে থাকবে যেন ফেলিক্সের স্ত্রী ইরিনা অপ্রত্যাশিত কয়েকজনকে আনন্দসঙ্গ দিচ্ছেন তখন ফেলিক্স রাসপুটিনকে বলবেন ইরিনা তার অতিথিদের বিদায় দিয়ে নিচে নেমে আসবেন রাসপুটিন যখন ইরিনার অপেক্ষায় থাকবেন তখন ফেলিক্স তাকে পটাসিয়াম-সায়োনাইডের প্রলেপ দেয়া পেস্ট্রি খেতে মদ পান করতে দেবেন

খুন তারা করেননি, তা কিভাবে নিশ্চিত করা হবে? জন্য প্রয়োজন কেউ যেন জানতে না পারে, রাসপুটিন সে রাতে ইউসুপভের প্রাসাদে গিয়েছিলেন তা ছাড়া বিষয়টিও নিশ্চিত করা প্রয়োজন, রাসপুটিন যেন কারো কাছে না বলে যে, তার সাথে ইরিনার গোপন মিলন ঘটবে পরিকল্পনা ছিল ফেলিক্স নিজে রাসপুটিনকে পিকআপ করে তার প্রাসাদের পেছনের সিঁড়ি দিয়ে একদম নিচতলায় নিয়ে আসবে এবং ষড়যন্ত্রকারীদের চরম সিন্ধান্ত ছিল যদি খুনের রাতে রাসপুটিন রেস্তোরাঁভিলা রোদেতে থাকেন, তবে সেখানে তার সাথে দেখা করা কিন্তু তা ঘটেনি

তারা তার লাশ কি করবে?রাসপুটিনকে খুন করার পর তারা তার লাশ কম্বল দিয়ে জড়িয়ে এর সাথে ভারী কিছু বেঁধে নদীতে ফেলে ডুবিয়ে দেবে যেহেতু এরই মধ্যে শীত এসে গেছে, পেত্রোগ্রাদের বেশির ভাগ নদীর পানিই বরফ হয়ে জমে গেছে সকালবেলাটা খুনিরা ব্যস্ত থাকেন জমা বরফে সুবিধামতো কোনো গর্ত খুঁজে পাওয়া যায় কি না, যার ভেতরে লাশটি ঢুকিয়ে দেয়া যায় এরই মধ্যে তারা একটা পেয়েও যান মালয়া নেভকা নদীতে
যেভাবে খুন
খুনের এক মাস আগে নভেম্বরের দিকে ফেলিক্স যোগাযোগ করেন তার দীর্ঘ দিনের বন্ধু মারিয়া গলোভিনার সাথে গলোভিনার সাথে ঘনিষ্ঠতা ছিল রাসপুটিনেরও ফেলিক্স গলোভিনাকে বলেন, তিনি বেশ কিছুদিন ধরে বুকের ব্যথায় ভুগছেন ডাক্তাররা তা সারাতে পারছেন না গলোভিনা তাকে পরামর্শ দেন, কোনো দেরি না করেই তার উচিত রাসপুটিনের কাছে যাওয়া কারণ তার রয়েছে রোগ সারানোর ক্ষমতা ফেলিক্সও জানতেন মারিয়া গলোভিনা তাকে সে পরামর্শই দেবেন মারিয়াই তার অ্যাপার্টমেন্টে রাসপুটিনের সাথে ফেলিক্সের সাক্ষাতের ব্যবস্থা করেন শুরু হলো ছলনার বন্ধুত্ব গড়ার কাজ কার্যত হলোই তাই অল্প দিনের মধ্যে ফেলিক্সকেলিটল ওয়ানডাক নামে ডাকতে শুরু করে দেন রাসপুটিন নভেম্বর-ডিসেম্বরে রাসপুটিন ফেলিক্সের মধ্যে বেশ কয়েকবার দেখা হয় ফেলিক্স রাসপুটিনকে বলেছিলেন, তিনি চান তাদের বন্ধুত্বের কথা যেন তার পরিবারের কেউ না জানে রাসপুটিন তাতে সম্মত ছিলেন তাই তাদের সম্মত সিদ্ধান্ত ছিল রাসপুটিন ফেলিক্সের অ্যাপার্টমেন্টে আসবেন-যাবেন প্রাসাদের পেছনের সিঁড়ি দিয়ে অনেকের সন্দেহ তারা দুজন রোগের চিকিৎসার চেয়ে বরং বেশি ব্যস্ত ছিলেন সমকামিতায়

একপর্যায়ে ফেলিক্স রাসপুটিনকে জানান, তার স্ত্রী মধ্য-ডিসেম্বরে ক্রিমিয়া থেকে আসছেন রাসপুটিন তার সাথে সাক্ষাতে আগ্রহ প্রকাশ করেন অতএব ঠিক হলো, ১৬-১৭ ডিসেম্বরের রাত সাড়ে ১২টায় ইরিনার সাথে রাসপুটিনের দেখা হবে - ঠিক করা হলো ফেলিক্স পিকআপ করে রাসপুটিনকে প্রাসাদে নিয়ে আসবেন

কয়েক মাস ধরেই ভয়ের মধ্যেই রাসপুটিনের দিন কাটছিল স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি মাত্রায় নেশা পান করে আসছিলেন ভুলভ্রান্তি ভুলে থাকার জন্য জিপসি নাচেও মেতে থাকতেন অনেকবার তিনি অনেকের কাছে বলেছেন, তিনি অচিরেই খুন হতে যাচ্ছেন এটি স্পষ্ট নয় তিনি বিপদাশঙ্কার অস্বস্তিবোধ থেকে, না পেত্রোগ্রাদের চার পাশে যে নানা গুজব ছড়িয়ে পড়েছিল তার ফলে তিনি এমনটি বলছিলেন এমনকি তার খুন হওয়ার আগের কয়েক দিন যারা তার সাথে দেখা করেছেন, তারা তাকে বাইরে না গিয়ে ঘরে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন
মধ্যরাতের দিকে রাসপুটিন পোশাক বদলান পরেন ঝুমকার মতো ফুলের এমব্রয়ডারি করা একটি হালকা নীল রঙের শার্ট এবং নীল ভেলভেট প্যান্ট তিনি শার্টের ওপরের বোতামটি লাগাতে পারছিলেন না চাকরানি সে বোতাম লাগাতে তাকে সাহায্য করে তাকে ডাকতে আসা লোক না আসা পর্যন্ত তিনি বিছানায় শুয়ে অপেক্ষা করতে লাগলেন তিনি কথা দিয়েছিলেন সে রাতে ইউসুপভের প্রাসাদে যাওয়ার কথাটি তিনি কাউকে জানাবেন না কিন্তু আসলে তা বেশ কয়েক জনকেই জানিয়েছিলেন সে কথা কন্যা মারিয়াকেও জানিয়েছিলেন তখন মারিয়া তার সাথেই বসবাস করছিলেন বলেছিলেন ঘনিষ্ঠ বান্ধবী মারিয়া গলোভিনাকে আগেই উল্লেখ করা হয়েছে, মারিয়াই তাকে যোগাযোগ করিয়ে দিয়েছিলেন ফেলিক্সের সাথে

মধ্যরাতে ষড়যন্ত্রকারীরা ইউসুপভের প্রাসাদে নতুন তৈরি ডাইনিং হলে একসাথে মিলিত হন এটি ছিল দই ভাগে বিভক্ত উষ্ণ আরামদায়ক একটি কক্ষ এক ভাগে ডাইনিং রুম, অন্য ভাগে ছোট্ট একটি লিভিং রুম নিচতলায় প্রাচীর বেষ্টিত অঙ্গনের দিকে দুটি জানালা কাটা ছিল বড় ফায়ার প্লেসে আগুন জ্বলছিল ফায়ার প্লেসের সামনে পাতানো ছিল মেরুভালুকের একটি চামড়া টেবিলে সাজানো ছিল পেস্ট্রি মদ . ল্যাজাভার্ট হাতে গ্লাভস পরে সায়োনাইড ক্রিস্টালগুলো গুঁেড়া করে পাউডার বানান এর সামান্য পাউডার পেস্ট্রি দুটি মদের গ্লাসে মিশিয়ে রাখেন কয়েকটি পেস্ট্রিতে সায়োনাইড পাউডার মেশানো হয়নি এগুলো রাখা হয় ফেলিক্সের খাওয়ার জন্য পেস্ট্রিতে বিষ মেশানোর পর . ল্যাজাভার্ট তার হাতের গ্লাভস খুলে ফেলে তা আগুনে ফেলে দেন এর ফলে বেশ ধোঁয়ার সৃষ্টি হয়, যা বের করে দিতে হয় বাইরের আকাশে সব কিছু তৈরির পর ফেলিক্স . ল্যাজাভার্ট গাড়ি নিয়ে রাসপুটিনকে আনতে যান

রাত সাড়ে ১২টায় পেছনের সিঁড়ি দিয়ে রাসপুটিনের অ্যাপার্টমেন্টে আসেন এক অতিথি রাসপুটিন দরজায় এগিয়ে এসে তাকে স্বাগত জানান চাকর মেয়েটা তখনো জেগে ছিল, পাকঘরের পর্দা আড়াল থেকে বাইরে তাকিয়ে দেখল, আরে যেলিটল ওয়ান গাড়িতে করে তারা চলে যান গাড়ি চালাচ্ছিলেন . ল্যাজাভার্ট তারা ইউসুপভের প্রাসাদের অ্যাপার্টমেন্টে পৌঁছলে ফেলিক্স রাসপুটিনকে নিয়ে যান পাশের প্রবেশপথে মার্বেল পাথরের হল পেরিয়ে সিঁড়ি দিয়ে নেমে চলে যান বেইজমেন্টের ডাইনিং রুমে রাসপুটিন রুমে ঢোকার সময় ওপরের তলায় গোলমেলে আওয়াজ মিউজিক শুনতে পান তখনইয়াঙ্কি ডোডল ডানডিগানটি বাজছিল ফেলিক্স রাসপুটিনকে জানান, কয়েকজন অতিথির মধ্যে ইরিনা আটকা পড়েছে, কিছুক্ষণের মধ্যে নিচে নেমে আসবে অন্য ষড়যন্ত্রকারীরা রাসপুটিন ফেলিক্স ডাইনিং রুমে না আসা পর্যন্ত অপেক্ষায় ছিলেন তারা নিচে নামার সিঁড়ির কাছেই দাঁড়িয়েছিলেন তারা অপেক্ষায় ছিলেন কিছু একটা ঘটার ব্যাপারে পর্যন্ত বই চলছিল পরিকল্পনা মতে কিন্তু আর বেশি দূর এগোতে পারেনি সেমতে যখন রাসপুটিন ইরিনার জন্য অপেক্ষা করছিলেন, তখন ফেলিক্স রাসপুটিনকে পেস্ট্রি খেতে বলেন রাসপুটিন বললেন, খাবেন না এগুলো খুবই মিষ্টি রাসপুটিন কিছুই খাবেন না, পানও করবেন না ফেলিক্স চিন্তায় পড়ে যান তিনি ওপরের তলায় যান অন্য ষড়যন্ত্রকারীদের সাথে কথা বলতে ফেলিক্স নিচে নেমে এলে রাসপুটিনের মন কিছুটা পরিবর্তন হয় তিনি সামান্য পেস্ট্রি খেতে রাজি হন তখন তারা মদ খেতে শুরু করেন মনে করা হয়েছিল, সাথে সাথে সায়োনাইডের বিষক্রিয়া শুরু হবে কিন্তু তেমন কিছু ঘটেনি ফেলিক্স রাসপুটিনের সাথে কথা বলে চললেন আর অপেক্ষায় থাকেন একটা কিছু ঘটবে বলে এক কোণায় একটা গিটার দেখে রাসপুটিন তা বাজাতে ফেলিক্সকে অনুরোধ করেন সময় বয়ে যাচ্ছিল রাসপুটিনের ওপর বিষের প্রভাব লক্ষ করা যাচ্ছে না রাত আড়াইটা ফেলিক্স আতঙ্কিত ফেলিক্স আবার ওজরের কথা বলে ওপরতলায় যান আসলে যান অন্যদের সাথে কথা বলার জন্য স্পষ্টতই বিষ যেন কাজ করছিল না ফেলিক্স গ্র্যান্ড ডিউক দিমিত্রি প্যাভলোভিচের কাছ থেকে একটি পিস্তল নিয়ে আবার নিচে যান ফেলিক্সের পেছনে লুকানো পিস্তলটি রাসপুটিন দেখতে পাননি তখন রাসপুটিন আবলুস কাঠের তৈরি সুন্দর একটি ক্যাবিনেট দেখছিলেন ফেলিক্স ফিরে এসে রাসপুটিনকে বললেন, ‘গ্রেগরি এফিমোভিচ, আপনি বরং যিশুখ্রিষ্টের ক্রুশের মডেলটির দিকে তাকান এবং প্রার্থনা করুন ফেলিক্স পিস্তল উঁচিয়ে গুলি করেন

অন্য ষড়যন্ত্রকারীরা সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে এলেন দেখলেন, রাসপুটিন মেঝেতে পড়ে আছেন আর ফেলিক্স পিস্তল হাতে তার ওপর দাঁড়িয়ে আছেন তারা রাসপুটিনের লাশ বহন করে নিয়ে যায় ভালুকের লোমের তৈরি কম্বল দিয়ে জড়িয়ে, যাতে করে চোয়ানো রক্ত বেরিয়ে দাগ না পড়ে রাসপুটিন তখনো শ্বাস ফেলছিলেন কয়েক মিনিট পর রাসপুটিন প্রবল একটা ঝাঁকুনি দিলেন এরপরই তার দেহ নিথর হয়ে গেল রাসপুটিনের মৃত্যু নিশ্চিত হলে ষড়যন্ত্রকারীরা সিঁড়ি ভেঙে ওপরতলায় গেলেন ঘটনাটি সেলিব্রেট করতে এবং সেই সাথে পরবর্তী রাতের জন্য অপেক্ষা করতে পরের রাতে তার লাশ এমন জায়গায় ফেলে দেয়া হবে, যাতে কেউ কিছুই জানতে না পারে

এর পরবর্তী ঘটনা সম্পর্কে আছে ভিন্ন মত কেউ বলেছেন, গ্র্যান্ড ডিউক দিমিত্রি প্যাভলোভিচ . ল্যাজাভার্ট রাসপুটিনের লোমশ কোটে জড়িয়ে গাড়িতে করে নিয়ে গিয়ে ফেলে আসে আবার আরেক বর্ণনা মতে, তারা দুজন প্রাসাদ ছেড়ে মোটেও বাইরে যাননি এক ঘণ্টা পর ফেলিক্স নিচে যান লাশ দেখার জন্য কেন তার এই লাশ দেখতে যাওয়া, এর কোনো ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি নিচে নেমে দেখলেন লাশ তখন ঠাণ্ডা হয়ে যায়নি তিনি লাশটি ধরে নাড়া দিলেন, কিন্তু কোনো সাড়া মেলেনি ফিরে আসার সময় লক্ষ করেন, রাসপুটিনের বাম চোখটা খোলার জন্য স্পন্দিত হচ্ছে তিনি তখনো বেঁচে ছিলেন! রাসপুটিন হঠাৎ লাফিয়ে উঠে ফেলিক্সের দিকে ছুটে গিয়ে তার কাঁধ ঘাড় জড়িয়ে ধরেন ফেলিক্স তার হাত থেকে ছোটার চেষ্টা করে শেষ পর্যন্ত তা করতে সফল হন তিনি দৌড়ে ওপরতলায় গিয়ে চিৎকার করে বলতে থাকেন, ‘সে এখনো বেঁচে আছে পুরিশকেভিচ ওপরতলায়ই ছিলেন তিনি যখন তার সভেজ রিভলবারটি পকেটে রাখছিলেন, ঠিক তখনই ফেলিক্স চিৎকার করতে করতে সিঁড়ি দিয়ে ওপরে উঠে আসছিলেন ফেলিক্স ভয়ে তখন কাঁপছেন তার চেহারা ফ্যাকাশে হয়ে গেছে, চোখ যেন কুঠরি থেকে বেরিয়ে আসতে চাইছে প্রায় অর্ধচেতন অবস্থা পাগলপারা হয়ে চলে গেলেন ওপরতলায়, পুরিশকেভিচের উপস্থিতিও যেন তার চোখে পড়ছে না পুরিশকেভিচ দ্রুত নিচে নেমে আসেন দেখেন, রাসপুটিন দেয়ালঘেরা প্রাঙ্গণ পেরিয়ে দৌড়ে পালাচ্ছে দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় বলছেন, ‘ফেলিক্স ফেলিক্স, আমি সব কিছু জারিনার কাছে বলব

পুরিশকেভিচ তার পিছে পিছে ছুটছেন দৌড়ে যাওয়ার সময় তিনি গুলি করেন, কিন্তু তা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয় আবার গুলি চালান, তাও লক্ষ্যভ্রষ্ট হয় এরপর নিজের হাতে কামড় দেন নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ ফিরিয়ে আনার জন্য এবারে ছোঁড়া গুলি ঠিক নিশানায় গিয়ে লাগল গুলি লাগল রাসপুটিনের পিঠে রাসপুটিন থেমে গেলেন, পুরিশকেভিচ আবার গুলি চালান এবার গুলি লাগে রাসপুটিনের মাথায় তিনি মাটিতে পড়ে যান তিনি মাথা ঝাঁকাচ্ছিলেন আর হামাগুঁড়ি দিয়ে চলছিলেন কিন্তু পুরিশকেভিচ তাকে ধরে ফেলেন, আর মাথায় লাথি মারতে থাকেন ভসিয়েভ নামের যে পুলিশ সদস্য ময়কা সড়কে ডিউটিতে ছিলেন, তিনি পরপর বেশ দু-চারটি গুলির আওয়াজ পান বিষয়টি দেখার জন্য তিনি এগিয়ে আসেন ইউসুপভ প্রাসাদের বাইরে দাঁড়িয়ে দেখতে পান দুজন মানুষ দেয়ালঘেরা প্রাঙ্গণ অতিক্রম করছে তিনি তাদের চিনতে পারলেন তারা প্রিন্স ইউসুপভ তার চাকর বুজিনিস্কি তিনি তাদের কাছে জানতে চান, তারা কোনো গুলির আওয়াজ শুনেছেন কি না? বুজিনিস্কি জানায়, না শুনেননি ওই পুলিশ ধরে নেন, হতে পারে এটি কোনো গাড়ির ব্যাকফায়ারের আওয়াজ এরপর তিনি পুলিশ ফাঁড়িতে চলে যান

রাসপুটিনের লাশ ভেতরে নিয়ে আসা হলো রাখা হলো সিঁড়ির কাছে সিঁড়ি চলে গেছে বেইজমেন্টের ডাইনিং হলে কোনো কারণে রাসপুটিনের বিকৃত হয়ে যাওয়া চেহারা দেখে ফেলিক্স ক্রুদ্ধ হয়ে ওঠেন তিনি পাউন্ড ওজনের একটি ডাম্বেল হাতে নিয়ে এটি দিয়ে রাসপুটিনের দেহে এলোপাতাড়ি আঘাত করতে থাকেন ফেলিক্সকে যখন থামানো হলো, তার দেহ রক্তরঞ্জিত হয়ে পড়ে
ফেলিক্সের চাকর বুজিনিস্কি তখন পুরিশকেভিচকে পুলিশের সাথে তার কথা হওয়ার বিষয়টি জানায় তারা তখন চিন্তিতÑ ওই সিপাই বিষয়টি অন্য সিপাইদের জানাতে পারে, বলতে পারে রাতে সে কী শুনেছে, কী দেখেছে তারা যখন এই পুলিশকে প্রাসাদে ডেকে আনার জন্য পাঠান, তখন হয়তো তারা নেশাগ্রস্ত ছিলেন ভসিয়েভ বলেছেন, তিনি যখন প্রাসাদে প্রবেশ করেন তখন এক লোক তাকে জিজ্ঞেস করে জানতে চান, তিনি কি পুরিশকেভিচের কথা আগে কখনো শুনেছেন?

ওই পুলিশের জবাব, ‘হ্যাঁ শুনেছি
আমি পুরিশকেভিচ কখনো কি রাসপুটিনের কথা শুনেছেন? ঠিক আছে, রাসপুটিন আর নেই তিনি এখন মৃত আর আপনি যদি আমাদের মাদার রাশিয়াকে ভালোবাসেন, তবে আপনাকে ব্যাপারে চুপ থাকতে হবে
জি স্যারছোট্ট জবাব এই পুলিশের 

এরপর তারা এই পুলিশকে চলে যেতে দেন ভসিয়েভ ২০ মিনিট অপেক্ষার পর তার ঊর্ধ্বতনদের কাছে জানিয়ে দেনÑ তিনি কী দেখেছেন আর কী শুনেছেন

এটি বিস্ময়কর বিষয় পীড়াদায়ক তাকে বিষ খাওয়ানো হলো, এরপর তার ওপর তিনটি গুলি চালানো হলো, তারও পর তার দেহে ডাম্বেল দিয়ে বারবার আঘাত করা হলো, তারপরও রাসপুটিন জীবিত! তারা রশি দিয়ে তার হাত বাঁধল দেহ ভারী কাপড় দিয়ে মোড়ানো হলো গ্র্যান্ড ডিউক দিমিত্রি প্যাভলোভিচ আর . ল্যাজাভার্ট ফিরে এলেন তাদের যে কাজের জন্য পাঠানো হয়েছিল, তা করতে ব্যর্থ হয়ে তারা ফিরে আসেন তখন প্রায় ভোর হয়ে এসেছে তাই তারা এখন লাশের ঝামেলা থেকে উদ্ধার পাওয়ার জন্য ব্যস্তসমস্ত ফেলিক্স বাড়িতেই থাকেন গোসল করে নিজেকে পরিষ্কার করে নেয়ার জন্য বাকিরা লাশ তোলেন গাড়িতে দ্রুত চলে যান আগে থেকেই নির্ধারিত করে রাখা স্থানে লাশ তুলে ফেলে দেয়া হলো সেতুর পাশে এরপর ষড়যন্ত্রকারীরা একে অন্যের থেকে আলাদা হয়ে যে যার পথে চলে গেলেন ভাবলেন তারা খুনের কাজটি যথাযথভাবে সম্পন্ন করতে পারলেন
পরদিনের সকাল
১৭ ডিসেম্বর সকালে ঘুম থেকে ওঠেন রাসপুটিনের কন্যা দেখেন, তার বাবা লেটনাইটের সমাবেশস্থল থেকে লিটল ওয়ানকে নিয়ে ফিরে আসেননি রাসপুটিনের ভাইঝিও তার সাথেই থাকতেন তিনি মারিয়া গলোভিনাকে জানান, তার চাচা এখনো বাড়ি ফেরেননি মারিয়া কথা বলেন ফেলিক্সের সাথে, কিন্তু তাকে জানানো হয় তিনি এখনো ঘুমুচ্ছেন ফেলিক্স তখন ফিরতি ফোনে মারিয়া গলোভিনাকে জানান, আগের রাতে রাসপুটিনের সাথে তার একেবারেই দেখা হয়নি রাসপুটিনের বাড়ির সবাই জানত, একদম মিথ্যে কথা এর ফলে তারা সবাই খুবই শঙ্কিত হয়ে পড়েন

যে পুলিশ কর্মকর্তা পুরিশকেভিচের সাথে কথা বলেছিলেন, তিনি ওই রাতে যা শুনেছিলেন দেখেছিলেন, তা তিনি তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানিয়েছিলেন, যিনি জানিয়েছিলেন তারও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে ফেলিক্স উপলব্ধি করেছিলেন বাইরে নিশ্চয় রক্ত পড়ে আছে কারণ সেখানে রাসপুটিনের ওপর গুলি চালানো হয়েছিল ফেলিক্স তা ঢাকার জন্য তার একটি কুকুরের ওপর গুলি চালিয়ে এটি ফেলে রাখেন রাসপুটিনের রক্তের ওপর তিনি দাবি করেন, তার পার্টিতে আসা এক অতিথি মজা করার জন্য কুকুরটির ওপর গুলি চালিয়েছেন কুকুর গুলি করে মারা তার কাছে কৌতুকের বিষয় কথা বলে পুলিশকে বোকা বানানো যায়নি কারণ সেখানে যে পরিমাণ রক্ত ছিল তা একটি কুকুরের রক্তের চেয়ে বেশি ছিল আর একাধিক গুলির আওয়াজও শোনা গিয়েছিল তা ছাড়া পুরিশকেভিচ পুলিশ কর্মকর্তাকে বলেছিলেন তারা রাসপুটিনকে খুন করেছেন এবং - বলেছিলেন, ওই পুলিশ কর্মকর্তা যেন ব্যাপারে চুপ থাকেন, কোনোরূপ মুখ না খোলেন

বিষয়টি জারিনাকে জানানো হলে তাৎক্ষণিকভাবে তদন্ত শুরু করা হয় শুরুতেই পুলিশের কাছে সেই সাথে সবার কাছে স্পষ্ট হয়ে যায়, রাসপুটিনের খুনি কারা তার লাশ খুঁজে পাওয়ার আগেই ব্যাপারে জানাজানি হয়ে যায় ১৯ ডিসেম্বর পুলিশ মালয়া নেভকা নদীর ওপর গ্রেট পেট্রোভস্কি ব্রিজের কাছে লাশ খুঁজতে শুরু করে আগের দিন সেখানে তার রক্তাক্ত বুট পাওয়া যায় বরফের মধ্যে একটা গর্ত ছিল যখন তারা তার বরফে জমে থাকা লাশ টেনে তোলেন, তখন তার হাত ওঠানো অবস্থায় ছিল এর ফলে সবার বিশ্বাস পানির নিচে পড়েও তিনি জীবিত ছিলেন পানির নিচে থাকা অবস্থায় চেষ্টা করেছেন হাতের দড়ির বাঁধন খুলে ফেলতে একটি গাড়িতে করে রাসপুটিনের লাশ নিয়ে যাওয়া হয় মিলিটারি অ্যাকাডেমি অব মেডিসিনে সেখানে তার ময়নাতদন্ত করা হয় ময়নাতদন্তের রিপোর্টে দেখা গেছে :
০১. তার দেহে অ্যালকোহল পাওয়া গেলেও বিষাক্ত কোনো পদার্থ পাওয়া যায়নি; ০২. দেহে ছিল তিনটি বুলেটের দাগ বুকের বাম পাশে লাগা প্রথম বুলেটটি আঘাত হানে তার পাকস্থলী যকৃতে, তার পিঠের ডান দিকে ঢুকে পড়া দ্বিতীয় বুলেটটি আঘাত হানে কিডনিতে, আর মাথায় লাগা তৃতীয় বুলেটটি আঘাত করে মগজে; ০৩. ফুসফুসে সামান্য পরিমাণ পানি পাওয়া যায়
তাকে কবর দেয়া হয় ২২ ডিসেম্বর, ফিয়োদরোভ ক্যাথেড্রালে উল্লেখ্য, বিশপের এলাকাধীন প্রধান গির্জাকে বলা হয় ক্যাথেড্রাল
এরপর কী ঘটে?
এরপর খুনিদের গৃহবন্দী করে রাখা হয় অবস্থায় বহু লোক তাদের দেখতে আসেন তারা চিঠি লিখে তাদের অভিবাদন জানান খুনিরা আশা করছিলেন, তাদের বিচার হবে কারণ তা তাদের নিশ্চিত বীর করে তুলবে তা হতে না দেয়ার প্রয়াস হিসেবে জার তদন্ত বন্ধ করে দেন আদেশ দিলেন, কোনো বিচার হবে না যদিও খুন হওয়া ব্যক্তি ছিলেন সম্রাট সম্রাজ্ঞীর ভালো বন্ধু আস্থাভাজন, খুনিরা ছিলেন তাদের স্বজন ফেলিক্সকে দেয়া হয় নির্বাসন গ্রান্ড ডিউক দিমিত্রি প্যাভলোভিচকে পাঠানো হয় পার্সিয়ায় যুদ্ধ করতে

যদিও রাসপুটিনের সাথে জার জারিনার সম্পর্ক তাদের সাম্রাজ্যকে দুর্বল করে তোলে, তবুও রাসপুটিনের হত্যা দেরিতে হলেও তাদের ঠেলে দেয় চরম ভাগ্য বিপর্যয়ের দিকে রাসপুটিনের খুনের মাত্র তিন মাসের মধ্যে জার নিকোলাসকে সিংহাসন হারাতে হয় ১৯১৭ সালের মার্চে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের চাপ সেই সাথে বছরের পর বছর ধরে চলে আসা অন্যায়-অবিচারের জের ধরে দ্বিতীয় জার নিকোলাস ক্ষমতা থেকে উৎখাত হন তাকে ক্ষমতা থেকে ক্ষমতাচ্যুত করে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি নিয়ে ক্ষমতায় আসে প্রভিশনাল গভর্নমেন্ট আর রাসপুটিনের খুনের এক বছর পর ১৯১৮ সালের ১৬-১৭ জুলাই রাতে রুমানভের তথা সম্রাট পরিবারের সব সদস্য রাশিয়ার সবশেষ সম্রাট জার নিকোলাস বিনা বিচারে বন্দী অবস্থায় হত্যার শিকার হন তার সাথে হত্যা করা হয় স্ত্রী জারিনা (সম্রাজ্ঞী) আলেক্সজান্দ্রা, তাদের চৌদ্দ বছর বয়সী পুত্র জারেভিচ, তাদের চার কন্যা, চিকিৎসক ডা: বটকিন, দীর্ঘদেহী চাকরানি দুই ভৃত্য
প্রশ্ন থেকেই গেছে
রাসপুটিনের খুনের বিষয়টি অনেক প্রশ্ন রেখে গেছে, যার জবাব আজো পাওয়া যায়নি রাসপুটিনকে বোকা বানানোর জন্য ইরিনা নামের যে মহিলাকে ওপর তলার আছে বলে বলা হয়েছিল, সেই ইরিনা কি ষড়যন্ত্র সম্পর্কে জানতেন? পেস্ট্রিতে আদৌ কি কোনো বিষ মেশানো হয়েছিল? ইরিনার জন্য দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করেও কেন রাসপুটিন অধৈর্য হননি? শেষ দুটি গুলি কি সত্যি সত্যিই পুরিশকেভিচ করেন, না তা করেন গ্র্যান্ড ডিউক দিমিত্রি প্যাভলোভিচ?